ডেক্স রিপোর্টঃ- পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের বাসায় ডেকে ব্ল্যাক মেইল করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে বাসায় মদ ও নাচ-গানের আসর বসিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার একাধিক অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। সোমবার তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মাদক মামলা হয়েছে। পিয়াসার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় এবং মৌয়ের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ মামলায় সোমবার তাদের তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পিয়াসা ও মৌ দিনে ঘুমাতেন আর রাতে বাসায় মাদক ও নাচ-গানের আসর বসাতেন। এ ছাড়া যোগ দিতেন বিভিন্ন পার্টিতেও। পার্টিতে যোগ দিয়ে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করে ডেকে আনতেন বাসায়। নিজেরা হয়ে উঠতেন রাতের রাণী। বিভিন্পন অঙ্গ ভঙ্গিতে তাদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে পরিবারকে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ রোববার রাতে প্রথমে বারিধারায় পিয়াসার বাসায় অভিযান চালিয়ে মাদকসহ তাকে গ্রেপ্তার করে। এর পর অভিযান চালানো হয় মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে মৌয়ের বাসায়। তার বাসাতেও মাদক পাওয়া যায়। পরে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, পিয়াসা ও মৌয়ের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই চক্রে জড়িত অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন জানান, পিয়াসা ও মৌয়ের বাসায় মাদক পাওয়া গেছে। সোমবার তাদের দুজনকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
২০১৭ সালে মে মাসে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার পর আলোচনায় আসেন পিয়াসা। সর্বশেষ গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়া নামের এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর মামলায়ও পিয়াসার নাম ছিল। পিয়াসা আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের সাবেক স্ত্রী। রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনার কিছু দিন আগে সাফাতের সঙ্গে তার বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। পিয়াসার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায়।
গুলশান থানায় পিয়াসার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী হয়েছেন ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের এসআই শাহিদুল ইসলাম। এজাহারে বলা হয়েছে, পিয়াসার বাসা থেকে চারটি কলকি বা হুক্কা, ৭৮০ পিস ইয়াবা, ফ্রিজের ভেতর থেকে সিসা তৈরির সরঞ্জাম, রান্নাঘরের কেবিনেট থেকে বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয়। তিনি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় বিক্রি করতেন। নিয়মিত মাদক ও গান-নাচের আসর বসাতেন বাসায়।
মোহাম্মদপুরে মৌয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক শিশির কুমার কর্মকার। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মৌয়ের বাসা থেকে ৭৫০ পিস ইয়াবা ও ১২ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করতেন এবং লোকজনকে বাসায় এনে আসর বসাতেন। সেই আসরে মাদক বিক্রি করতেন তিনি।
কমেন্ট করুন